ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া আর ইঞ্জিনিয়ার এই দুটো শব্দের মধ্যে আকাশ জমিন পার্থক্য। ইঞ্জিনিয়ারিং যদি হয় কল্পনার জগৎ,আর ইঞ্জিনিয়ার হল কঠোর বাস্তব।ইঞ্জিনিয়ারিং যদি হয় মায়ের পেটে ১০ মাস ১০ দিন থাকা ভ্রূণ আর ইঞ্জিনিয়ার হল বাচ্চা।
যে ছেলে টা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া কালীন সকাল ১০ টায় ঘুম থেকে উঠতো,তাকে এখন সকাল সাড়ে ছয়টায় ঘুম থেকে উঠে ৮ টায় ডিউটি join করতে হয়।যে ছেলে টা টানা ২ ঘণ্টার বেশি ক্লাস করতে পারতো না সে এখন দিনে ১২ ঘণ্টা ডিউটি করে।যে ছেলে টা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া কালীন অকারণে ক্লাস bunk করত,তাকে এখন একটা ছুটি নিতে গেলে বসের পিছনে তিন দিন ঘুরতে হয়।যে ছেলে টা স্বপ্ন পূরণ করার জন্য ঘর ছেড়েছিল,তার এখন ঘরে ফিরে টাই স্বপ্ন হয়ে গেছে।
যে ছেলে টা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াকালীন চোথা ছাড়া পরীক্ষায় পাশ করতে পারতো না,সে এখন কর্মক্ষেত্রের বড় বড় প্রবলেম solve করে।যে ছেলে টা আগে ইংলিশ এ কথা বলতে গিয়ে তদলাতো,বলতে পারতো না।সে এখন ফটর ফটোর করে ইংলিশে কথা বলে। যে ছেলে ইঞ্চিনিয়ারিং পড়া কালীন বাড়ির প্রতি টা occasion এ বাড়ি যেতো,এখন তার লাইফে occasion বলে কিছু নেই।ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া কালীন বন্ধু বান্ধব দের সঙ্গে প্রায়ই পার্টি হয় ।আর ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পর, বন্ধু বান্ধব দের সঙ্গে পার্টি করাটা ধূমকেতুর মতো হয়ে গেছে।ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া কালীন সেমিস্টার এর আগের এক সপ্তাহ শুধু টার্গেট থাকতো ।আর ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পর প্রতিদিন টার্গেট পূরণ করতে হয়।
যে ছেলে টা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া কালীন মেসের পাশের দোকানে চপ কিনতে গেলে জুনিয়ার ভাই টি কে পাঠাতো।তার এখন জব খুঁজতে এবং এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানি করতে পায়ের জুতো ছিড়ে যায়। যে ছেলেটা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াকালীন এতটাই কেয়ারলেস থাকতো যে পরীক্ষার হলে পেন নিয়ে যেতে ও ভুলে যেত। আর ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পর সে এতটাই কেয়ারফুল যে তার উপর ৫০ টা মানুষের জীবনের সেফটি ডিপেন্ড করে।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াকালীন তুমি নিঃস্বার্থ পরায়ণ অনেক বন্ধু পাবে আর ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পর স্বার্থপর বন্ধু পাবে।
যে মেয়েটা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াকালীন এক গ্লাস জল ও গড়িয়ে খেতো না, তাকে এখন সংসার এবং জব দুটো একসঙ্গে সামলাতে হয়।যে মেয়ে টা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াকালীন ভেবেছিলো, তাকে ভবিষ্যতে অফিস টু সাইট, সাইট টু অফিস ঘুরতে হবে। সে এখন বেডরুম টু কিচেন,কিচেন টু বেডরুম ঘুরে।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াকালীন মার্কসের গুরুত্ব থাকে কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পর মার্কসের নয়, স্কিল এর গুরুত্ব থাকে। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াকালীন সময় ছিল, সুখ ছিল, স্বচ্ছন্দ ছিল না, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পর সাচ্ছন্দ আছে, কিন্তু সুখ আর সময় কোনটাই নেই।
(সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মতামত)
Comments
Post a Comment
Thank you, Stay connected & subscribe to this blog...