জীবন যখন যেমন!

জীবন যখন যেমন! 
# আশীষ কুণ্ডু 

এই সুন্দর পৃথিবীটা এমন ভয়াবহ হয়ে যাবে কে জানতো! অয়শ ও ভাবেনি!অর্থ বরাবর- ই একটা সমস্যা অয়শের কাছে। তবু টেনেহিঁচড়ে সংসারটা চলছিলো। এখন তো 
বেরোনোই বন্ধ প্রায়।  কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে। টিউশনিটাই ভরসা। অথচ মুখে হাসি ফুটিয়ে রাখতে হবে। অন্ততঃ পক্ষে আজকের দিনটায়। এইদিনটা তো বছরে একদিনই আসে। আজ 25 আগষ্ট 
সুমনার জন্মদিন। বৌয়ের জন্মদিনে মুখ ব্যাজার করে রাখার সাহস আর ক'জনের
হয়। অয়শ তো এমনিতেই নরমপন্থী, তাই বুকের কষ্ট আর পকেটের হাল চেপে, সকালেই মেয়ের সঙ্গে ফর্দ বানাতে বসলো। 
" মাছটা এনো, জন্মদিনে মাছ আর পায়েস, এই তো যথেষ্ট, -মাংস-টাংস আনতে হবে না, অযথা ঝামেলা, একগাদা খরচা!" সুমনার প্রবচনে সবে অয়শ একটু স্বস্তি বোধ করছিলো, তখনি প্রতিবাদী মেয়েটা।সুকন্যা
মাছ খেতে চায় না মোটেই। বললো-"না বাবা, আমি মাছ খেতে পারবো না, আমায় বরং সেদ্ধ ডিম ভাত দিও। "- অভিমানী মেয়েটা ঠোঁট ফোলায়। মেয়ে অষ্টাদশী, কিন্তু বাবা-মার কাছে ছোটমেয়েই রয়ে গেছে। 
সুমনা ঝাঁঝিয়ে উঠলো,"ওকে আরো প্রশ্রয় দাও, বাঙালীর মেয়ে মাছ খাবেন না, একেবারে বাপের আস্কারা পেয়ে গোল্লায় যাচ্ছে। আমার কথা কে শোনে----"গজগজ করতে করতে সুমনা রান্নাঘরে ।
বাজারের থলে নিয়ে বেরোতে গিয়ে অয়শ দেখলো চপ্পলের স্ট্রাপটা ছেঁড়া। রাতে নিশ্চয়ই পাড়ার ঘেয়ো কুকুরটা ঢুকেছিল, স্ট্রাপটা কেটে দিয়ে গেছে। এখন উপায় কি? 
সবে ধন নীলমণি চপ্পলের দফারফা। আর একটা বুট আছে, যেটা ক্লায়েন্টের অফিসে পড়ে যাবার জন্য। বুট পড়ে, এই পায়জামা পাঞ্জাবিতে আর যাই হোক বাজারে যাওয়া যায় না। চুপচাপ ঘরে ঢুকে আলগোছে সেফটিপিন নিয়ে এলো অয়শ। না সুমনা টের পায়নি। চটিটা ম্যানেজ হয়ে গেলো। খোঁড়াতে খোঁড়াতে সাইকেল চেপে বসলো
অয়শ। মাংসের দোকানে গিয়ে এক গাল মাছি। আটশো টাকা কিলো। হিসেব গুলিয়ে
যাচ্ছে অয়শের।

ক্রমশঃ

Comments

Science

Popular Posts

ভটচাজ সাহেব

এবার তোরা ত্রিশূল ধর

বাংলার তুল্য শ্রুতিমধুর আর কোন ভাষা!

কেমন আছো আকাশ

।। বৃত্ত টা কিন্তুু ছোটো হয়ে আসছে, আপনি সুরক্ষিত তো? ।।

ধসা বামুন

ছিদ্রান্বেষণ

1.দুইটি পরমাণুর ভর সংখ্যা একই হলেও, নিউট্রন সংখ্যা কম হয় কেন? নিউট্রন কেন আধান নিরপেক্ষ?

অহল্যা

চিঠি