
শিবঠাকুরকে আমার বেশ লাগে। একেবারে বিন্দাস! বেশ একটা ক্যাজুয়াল, ডোন্ট কেয়ার ভাব! সাজ পোশাক দেখ। এতো বড়ো একজন দেবতা। জমকালো পোশাক পড়তেই পারতেন। শিব ঠাকুর শুধু লজ্জা নিবারণ এর জন্য, ভালো জায়গায় যেতে হলে বড়োজোর ব্যাঘ্র চর্ম ব্যস। গলায় দামি হারের বদলে জঙ্গল থেকে একটা মোটা সাপ তুলে নিয়ে জড়িয়ে নিলেন, হয়ে গেলো। একদম সাদামাটা!
তিনি উচ্চবর্গীয় দের সঙ্গে মেলামেশা করেন না; অধঃপতিত নিম্নবর্গীয় ভূত - প্রেতদের সঙ্গে থাকতে ভালোবাসেন। এমন "ডাউন টু আর্থ " দেবতা আর দ্বিতীয়টি নেই।
ব্যাক্তিত্ব দেখেছো! কোনো দেবতার সাহস হবেনা তাঁর মুখের উপর কথা বলার। গাঁজা ভাং খান বটে, তবে তাঁর ক্যারেক্টার নিয়ে কথা বলতে পারবে না। প্রায় সব দেবতার মধ্যেই চরিত্রের অল্প বিস্তর গোলমালের কথা শোনা যায়; কিন্তু শিবঠাকুরের চরিত্রের গোলমালের কথা শোনা যায় না
ওই রকম সাদামাটা থাকেন বটে, তাই বলে তার গুন কি কম? ফাইন আর্টসের একটি শাখায় তাঁর ধারে কাছে ত্রিভুবনে কেউ আছে? তাঁর নৃত্যকলার কথা বলছিলাম। নৃত্যকলায় তাঁর সমান বিশারদ ত্রিভুবনে আর কে আছে? তাঁর ওই বিখ্যাত "নটরাজ" পোজটি তো সারা পৃথিবীর লোগো হয়ে গেছে। আর তাঁর "তান্ডব নৃত্য"? আর এতরকম যোগ মুদ্রা? সব তো তাঁরই সৃষ্টি। যোগের ব্যাপারে তাঁর ধারে কাছে কেউ নেই।
গৃহিণী, ধনী গিরিরাজ হিমালয়ের কন্যা, বাপের দেওয়া হিমালয়ান সিংহের পিঠে চেপে ঘুরে বেড়ান। কর্তা টি কিন্তু নির্লোভ। তিনি ষাঁড়ে চড়েই তার কাজ সারেন। ছেলেমেয়েদের মা বড়োলোকের বিটি, সিংহ চড়ে ঘুরে বেড়ান। ভোলানাথ কিন্তু ছেলেমেয়েদের দিলেন_ একজন কে ইদুর, একজন কে পেঁচা, একজন কে

হাঁস, একজন কে ময়ূর। অতি সাধারণ বাহন। বাপের যা ব্যাক্তিত্ব, ছেলেমেয়েরা মা এর কাছে আবদার করার সাহস পায়নি।
নিজে শ্মশানে মশানে ঘুরে বেড়ালেও ছেলেমেয়েদের ব্যাপারে তিনি "plane living, high thinking" নীতিতে বিশ্বাসী। তাদের কিরকম বানিয়েছেন দেখো। কার্তিক হয়েছে বড় যোদ্ধা, দেব সেনাপতির পদে নিযুক্ত হয়েছে। সৌর জগতের ব্যাবসায়ী দের রাশ গণেশের হাতে; সরস্বতী লেখাপড়া গানবাজনায় ওস্তাদ।স্বর্গমর্তের এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট এর দায়িত্বও অনায়াসে পেয়ে গেছেন। আর লক্ষী, ইকোনোমিক্সে তুখোড়। সুতরাং সারা মর্তের অর্থদপ্তর তার হাতে।
কিন্তু তিনি শুধু দুটো বেলপাতাতেই সন্তুষ্ট.....হর হর মহাদেব..

------- শিব পূজা উপলক্ষে
Comments
Post a Comment
Thank you, Stay connected & subscribe to this blog...